
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। টানা চার দিন ধরে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া ও ঘন কুয়াশার দাপটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলার স্বাভাবিক জনজীবন। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে নবীনগর উপজেলা সদরসহ আশপাশের সড়ক ও জনপথ, ফলে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
অতিরিক্ত শীতের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু, বয়স্ক ও নিম্ন আয়ের মানুষজন। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। স্থানীয় চিকিৎসকদের তথ্যমতে, এই সময়ে সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে। তারা বলছেন, শিশু ও প্রবীণদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা ও নিয়মিত পরিচর্যা জরুরি।
শীতের তীব্রতায় নবীনগরের বাজার ও ফুটপাতগুলোতে বেড়েছে গরম কাপড়ের কেনাবেচা। নবীনগর সদর বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে ফুটপাতে অস্থায়ী দোকানে শীতবস্ত্র সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্বল্প আয়ের মানুষজন তুলনামূলক কম দামে নিজেদের ও পরিবারের জন্য শীতবস্ত্র সংগ্রহ করছেন।
এদিকে শীত নিবারণের জন্য নদীর পাড়, রাস্তার মোড়, বাসস্ট্যান্ড ও পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে দেখা যাচ্ছে মানুষ খড়কুটো, কাঠ কিংবা পুরোনো জিনিসপত্র জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছেন। কনকনে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে দিনমজুর, রিকশাচালক ও পথচারীরা আগুনের পাশে শরীর গরম করছেন।
শীতের সঙ্গে সঙ্গে ফুটপাতে জমে উঠেছে মৌসুমি পিঠার দোকান। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে গরম ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা ও পাটিসাপটা খেতে বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে। শীতের আমেজে এসব পিঠা যেন পথচারীদের জন্য বাড়তি স্বস্তি এনে দিচ্ছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন শীত আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়ার কারণে অনেকের দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষজন পড়েছেন চরম বিপাকে।
সচেতন মহল ও চিকিৎসকরা শীত মৌসুমে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। পর্যাপ্ত গরম কাপড় ব্যবহার, উষ্ণ খাবার গ্রহণ এবং অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তারা। পাশাপাশি শিশু ও বয়স্কদের প্রতি আলাদা করে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সব মিলিয়ে, হাড় কাঁপানো এই শীতে নবীনগরের জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীত মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে থাকতে হচ্ছে বাড়তি সতর্ক ও সচেতন।




















